আজ শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫৭ অপরাহ্ন
পল্লী জনপদ ডেস্ক॥
দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম থেকে প্রত্যাশা থাকলেও এখন পর্যন্ত ‘নির্বাচনের প্রত্যাশিত অনুকূল পরিবেশ’ দেখতে না পাওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সাথে মতবিনিময় সভার শুরুতে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা সব দলকে সংলাপ ও নির্বাচনে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম, কিন্তু অনেকেই সাড়া দেয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর নিজস্ব কৌশল থাকতে পারে। আমরা তার মধ্যে অনধিকার চর্চা করবো না।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, কোনো সংকট সৃষ্টি হলে তা নিরসনে আমরা অত্যন্ত আন্তরিক। আমাদের প্রত্যাশা নির্বাচন আয়োজন করতে চাই আয়োজক হিসেবে। প্রত্যাশা প্রথম থেকেই ছিল, অনুকূল পরিবেশটুকু হয়ে ওঠেনি। সিইসি বলেন, আমাদের বিষয়টা হচ্ছে আন্তরিক যে পরিবেশ অনুকূল হয়ে উঠুক। এজন্য নিরন্তর আহ্বান করে যাচ্ছি, সংলাপ করেছি। যারা আসতে চান না তাদের আমার পক্ষ থেকে আধা সরকারিপত্র দিয়েছি। কিন্তু সাড়া পাইনি।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক কৌশল তাদের নিজস্ব ব্যাপার। তাদের নিজস্ব কৌশল থাকতে পারে। আমরা তার মধ্যে অনধিকার চর্চা করবো না। কর্মশালা সিইসির সঙ্গে অন্য নির্বাচন কমিশনার, ইসি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম প্রমুখ অংশ নেন।
ডিসেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারির শুরুর মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি। সেজন্য নভেম্বরের মাঝামাাঝি সময়ে তফসিল ঘোষণার পরিকল্পনা করেছে সাংবিধানিক সংস্থাটি। কিন্তু বিরোধী দলে থাকা বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে, বিলুপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফেরানোর কোনো সুযোগ নেই, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থাতেই নির্বাচন হবে।
আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো আহ্বান জানিয়ে আসছে। কিন্তু রাজনীতির ময়দানে দুই প্রধান প্রতিপক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে তৈরি হয়েছে এক ধরনের অনিশ্চয়তা। সিইসি হাবিবুল আউয়াল বলেন, “আন্তরিকভাবে আমরা চাই, রাজনৈতিক পরিবেশ অনুকূল হয়ে উঠুক। আমাদের আরাধ্য কর্মটা সহজ হোক। সেজন্য আমরা নিরন্তর আহবান করে যাচ্ছি।”
বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একাধিকবার সংলাপ করলেও বিএনপি তাতে সাড়া দেয়নি। সে কথাও সভার শুরুতে বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, “সেখানে যেসব দল আসতে চাননি, তাদের প্রতি আমাদের বিনীত আবেদন ছিল, সংলাপে আসুন। সেজন্য আমরা আধা সরকারি পত্র দিয়েও অনানুষ্ঠানিকভাবে তাদেরকে আলোচনায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। বলেছিলাম, অন্তত একটু চা খেতে আসেন।
“আমরা কিন্তু সাড়া পাইনি। আমরা দেখাতে চেয়েছিলাম, আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করছি। কিন্তু তাদের যে রাজনৈতিক স্ট্রাটেজি, সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। আমরা স্পষ্ট করে জানিয়েছি, প্রতিটা রাজনৈতিক দল ও জোটের তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক কৌশল থাকতে পারে, সেটা তাদের নিজস্ব ইস্যু। নির্বাচন কমিশন সেখানে অনাধিকার চর্চা করবে না।”
হাবিবুল আউয়াল বলছেন, সাড়া না পেলেও তারা রাজনৈতিক দলগুলোকে ‘নিরন্তর’ আহ্বান জানিয়ে যাবেন। “আপনারা আসেন, সমস্যার সমাধান হোক অথবা মাঠে আপনারা বিরাজমান সংকটগুলো নিরসন করুন।”
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অনিয়ম নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে প্রয়োজনের সারা দেশের ভোট বন্ধ করে দেয়া হবে।’ সিইসি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের অনিয়ম নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে প্রয়োজনে পুরো দেশের ভোট বন্ধ করে দেওয়া হবে। ভোট যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবারই সহায়তা প্রয়োজন।
প্রিসাইডিং অফিসারের উদ্দেশে তিনি বলেন, নির্বাচনে অনিয়ম নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ভোট বন্ধ করে প্রিসাইডিং অফিসারের কেন্দ্র ত্যাগের কথা বলেন সিইসি। ভোট বন্ধ না করলে সেটিও ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে বলে জানান তিনি।