আজ শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২১ পূর্বাহ্ন
বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি ॥
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার উত্তর দাসপাড়া দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মাছুম বিল্লাহর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়ম বহির্ভূতভাবে তিনি সিনিয়র শিক্ষককে ডিঙিয়ে ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সুপার হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর তার বিরুদ্ধে মাদ্রাসার তহবিল থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কোন প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পাবেন সহকারি প্রধান শিক্ষক বা সিনিয়র শিক্ষক। কিন্তু বিধিবহির্ভূতভাবে ২০১৯ সালের ৩ জুন ওই মাদ্রাসার সহকারি মৌলভী মাসুম বিল্লাহ ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন।
নিয়মানুযায়ী ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার কথা মাদ্রাসার সিনিয়র সহকারি মৌলভী নজির উদ্দিন মৃধার। বিষয়টি নিয়ে নজির উদ্দিন মৃধা মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেন, মাসুম বিল্লাহ ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর শিক্ষক-কর্মচারীদের জিম্মি করে প্রতি মাসে তাদের প্রাপ্য বেতন-ভাতাদি থেকে টাকা কর্তন করে আত্মসাৎ করছেন। সরকারি অনুদানের ১,৯৪,৭২৭ টাকা তিনি আত্মসাত করায় সকল শিক্ষক-কর্মচারী উক্ত টাকা থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত হয়েছে। মাদ্রাসার ৫ জন শিক্ষকের প্রাপ্য বেতন থেকে ৬,৩৫০ টাকা কর্তন করে তিনি আত্মসাৎ করেন। মাছুম বিল্লাহ শিক্ষক-কর্মচারীদের গচ্ছিত রাখা ৪৩,৩০০ টাকা আত্মসাৎ করেন।
তিনি মাদ্রাসার উপবৃত্তির ছাত্র-ছাত্রীদের টিউশন ফির ৫০ হাজার টাকা তুলে আত্মসাৎ করেন। মাদ্রাসা মেরামতের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তহবিল থেকে পাওয়া ৩ বান্ডেল ঢেউটিন ও মেরামত বাবদ নগদ ৬হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেই টাকা দিয়ে কাজ না করে তিনি নিজে সব টাকা আত্মসাৎ করেন।
পুনরায় তিনি শিক্ষক-কর্মচারীদের উপর চাপ সৃষ্টি করে মেরামত কাজের জন্য আরও ১০ হাজার টাকা আদায় করেন। তিনি মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক শাহজালাল সিকদারকে শ্রমিক দেখিয়ে তার মেয়ে উম্মে হাফসাকে ২০২২ শিক্ষাবর্ষের নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট উপবৃত্তিতে নাম দিয়েছেন। মূলত মাদ্রাসায় কোন বিজ্ঞান বিভাগ নেই এবং উম্মে হাফসা ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীই নন। তিনি লেখাপড়া করেন বাউফল আছিয়া খাতুন মহিলা মাদ্রাসায়।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মাসুম বিল্লাহ বলেন, নিয়ম মেনেই আমাকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমি কখনওই কোন অনিয়ম করি না। ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল আমিন বলেন, অভিযোগের তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।