আজ মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:২২ পূর্বাহ্ন
সংবাদের জের : সাংবাদিক পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা, বিভিন্ন মহলের ক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
বরিশাল নগরীর ২৯ নং ওয়ার্ড কাশিপুরের চিহ্নিত মাদক কারবারি জাকারিয়া আলম (গাঁজা সুবহে) ও তার সহোদর মো: সাইফুল আলম এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মাদক বিক্রির অভিযোগ নিয়ে একাধিক নিউজ পেপারে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার জের ধরে প্রতিহিংসামূলকভাবে সিনিয়র সাংবাদিক রেদওয়ান রানাসহ তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বরিশালের একাধিক গনমাধ্যম কর্মী সূত্রে জানা গেছে, সিনিয়র সাংবাদিক রেদওয়ান রানা এয়ারপোর্ট থানা প্রেসক্লাবের দুইবারের সাধারণ সম্পাদক এবং শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত ”বরিশাল প্রেসক্লাব” এর সহযোগী সদস্য এমনকি জাতীয় দৈনিক সমকাল, আজকের বার্তা, বরিশাল প্রতিদিন, আজকাল, বাংলার বনে পত্রিকায় সুনামের সাথে কাজ করেছেন ও অনলাইন পোর্টাল বরিশাল সিটি নিউজ এর সম্পাদক এবং বেসরকারি টিভি চ্যানেলেও চুক্তিভিত্তিক কর্মরত ছিলেন এই সাংবাদিক। তার এই দীর্ঘদিনের সাংবাদিক পেশায় গণমানুষের ক্ষতি হয় এমন সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে কি না তা আমাদের জানা নেই।
এবিষয়ে কাশিপুর বাজার এলাকার এক ব্যবসায়ী (মনির ছদ্মনাম) জানায় জাকারিয়া আলম সুবহে ও তার ভাই সাইফুল, ওদের বাবা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শহিদুল আলম মনির হটাৎ মৃত্যুবরণ করলে ওই পরিবারে অভিশাপ নেমে আসে। বাবার মৃত্যুতে আর্থিক ক্ষতিরমুখে পরলে পরিবারের হাল ধরা ও ভরনপোষণ জোগাতেই মূলত ছেলে দুইটা মাদকের সাথে জড়িয়ে পরে। নিজেরা খাওয়ার পাশাপাশি সাথে টাকার জোগান দিতে ইয়াবা ও গাঁজা বিক্রির পরিকল্পনা শুরু করে দেয় তারা। সত্যি বলতে কি আমি নিজেও ওদের কাছ থেকে দুই-একবার কিনে খাইছি। স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিসিসির ২৯ নং কাউন্সিলর ফরিদ আহমেদের ছত্র-ছায়ায় মাদক (ইয়াবা-গাঁজা) বিক্রি চালিয়ে যেতো তারা। শুধু তারা নয় ওয়ার্ডের বিভিন্ন সড়কে আছে এদের সহযোগী। এমনকি ওদের বাসার বিপরীতে কয়েকটি রিকশা চালকদের গ্রেজ থাকায় কাস্টমার পেতেও বেগ পোহাতে হয়নি বলে জানায় বিশ্বস্ত এই সূত্রটি। সাইফুল ও সুবহে কাউন্সিলরের মদদপুষ্ট হয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় দীর্ঘদিন পর্যন্ত চালিয়ে যাচ্ছে মাদক বিক্রি।
উন্নয়ন কর্মী রেবেকা সুলতানা তিথি বলেন, মাদক কারবারিরা যেসময় যে দল বা যে নেতা ক্ষমতা বসুক ওরা রাতারাতি তাদের লোক হয়ে যায় চোখের পলকে। শুনেছি ঠিক তেমনি বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ মেয়াদকালে কাউন্সিলর ফরিদ আহমেদের দাপট দেখিয়ে ২৯ নং ওয়ার্ডের বন বিভাগ সংলগ্ন মিলকির বাড়ি, ইছাকাঠী সড়ক, লাদেন সড়ক, শিব বাড়ির মোড়, শাহ পরাণ সড়কের ফকির বাড়ি, কলোনির মোড়, বাঘিয়া বড় বাড়ি বনলতা এলাকায় মাদকের হাট বসিয়ে যুব সমাজকে ব্যাপক ধ্বংসের মুখে নিয়ে যাচ্ছে এই গুটি কয়েক সমাজের দুষ্ট লোক। তাদের আইনের আওতায় আনলে সমাজ উপকৃত হবে বলে আমার বিশ্বাস।
সাংবাদিক পরিবারের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি বরিশালের সভাপতি মাসুদ রানা বলেন সাংবাদিকরা নিউজ করলেই মামলা-হামলার শিকার হতে হবে, কেনো এটা আবার কেমন আইন, মামলা নেয়ার আগে একটু তদন্ত করে দেখা উচিৎ ছিল না?
আমি প্রশাসনকে বলবো এঘটনায় যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হোক, পাশাপাশি সাংবাদিক রেদওয়ান রানার বিরুদ্ধে আনিত মিথ্যা ও ভিত্তিহিন অভিযোগ দ্রুত প্রত্যাহার করার জোর দাবি জানাই। তা নাহলে বরিশালের সাংবাদিক সমাজ চুপ করে বসে থাকবেনা।
এয়ারপোর্ট থানা প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি আশরাফুল ইসলাম সুমন বলেন সাংবাদিক রানা অনেক দিন ধরে এপেশায়। তার পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা করা সঠিক হয়নি।
এ ব্যাপারে ২৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ জানায় ওরা আমার লোক ঠিক আছে কিন্তু মাদকের সাথে জড়িত কথা সত্যি নয়।
এয়ারপোর্ট থানার পরিদর্শক লোকমান হোসেন বলেন মাদকের বিষয়ে জিরো টলারেন্স যে জড়িত থাকবে আমরা তাকেই আইনের আওতায় আনবো।সাংবাদিক পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা বিষয় জানান এটা আদালতের ব্যাপার আমাদের কিছু করার নেই।
বরিশাল সিটি নিউজ এর নির্বাহী সম্পাদক সাংবাদিক নাসির উদ্দীন ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক রণজিৎ সেন জানায় সিনিয়র সাংবাদিক রেদওয়ান রানাসহ তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দেয়া হয়েছে অবিলম্বে তা প্রত্যাহার না করা হলে পুলিশ কমিশনার ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে নামপ্রকাশ না করার শর্তে একাধিক এলাকাবাসী জানান, মাদক ব্যবসায়িদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো তদন্ত করলেই বেড়িয়ে আসবে থলের বিড়াল।