আজ শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:১৭ অপরাহ্ন

Logo
শিরোনামঃ
জুলাই-আগস্ট গণহত্যা : ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হচ্ছে ফেসবুকে মহানবী (স.)কে নিয়ে কটূক্তি, দুই ছাত্রলীগ কর্মী আটক গণতন্ত্রের ধারা বহমান রাখতে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার : তারেক রহমান আমাকে মোয়া বানানো হচ্ছে : সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন ড. মুহাম্মদ ইউনূস কখনোই বাংলাদেশের গর্বিত ইতিহাস মুছে ফেলার কথা বলেননি : প্রেস সচিব পিরোজপুরে গভীর রাতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাইভেটকার খালে, শিশুসহ নিহত ৮ কোন সরকারি চাকরিজীবী চাকরি ছাড়ার পর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না : জামায়াত দিশেহারা আ’লীগ, শীর্ষ নেতারা আত্মগোপনে, বেশিরভাগ ভারতে ঠাঁই! দ্রব্যমূল্য শিগগিরই সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবশেষে বরখাস্ত উর্মির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা
আন্দোলন চাঙা করতে ভিন্নপথে হাঁটছে বরিশাল বিএনপি

আন্দোলন চাঙা করতে ভিন্নপথে হাঁটছে বরিশাল বিএনপি

 

আন্দোলন চাঙা করতে ভিন্নপথে হাঁটছে বরিশাল বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

দীর্ঘদিন থেকে বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে বিরোধ এবং নিজেদের মধ্যকার অভ্যন্তরীণ দ্বন্ধ মেটানোসহ আগামীদিনে রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রাম চাঙা করতে কৌশলী পথে হাঁটতে শুরু করেছে বরিশাল বিএনপি।

দলীয় নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সরকার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে হামলা-মামলা এবং তৎসময়ে কমিটিতে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের এবার গুরুত্ব দিয়ে ঐক্যবদ্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। আগামী মার্চ মাসে সরকার বিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে এবং রাজপথে শক্তি জানান দেওয়ার বিষয়টি সামনে রেখে স্থানীয় রাজনীতির বিভাজন মেটাতে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করে সামনে অগ্রসর হচ্ছে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দরা।

সূত্রে আরও জানা গেছে, মাঠপর্যায়ে কে কোন নেতার অনুসারী সেই বিষয়টি আপাতত ভুলে গিয়ে আগামীদিনগুলোতে একট্টা হয়ে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালন এবং আন্দোলন বেগবান করতে রাজনৈতিক সমাঝোতা অর্থাৎ এককাতারে নিয়ে আসতে বিগতসময়ে ঘোষিত পকেট কমিটিগুলো বিলুপ্ত করে সকলের সমন্ময়ে গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। যার পরিপেক্ষিতে গত ৬ ফেব্রুয়ারি বরিশাল সদর উপজেলার কমিটি বিলুপ্ত করে এবং ওই কমিটির বিরোধীতা করা পদবঞ্চিত নেতাদের একত্রিত করে নতুন কমিটি ঘোষণা দিয়ে বেশ আলোচনায় এসেছেন জেলা দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক আবুল হোসেন ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবুল কালাম শাহীন। আগামীতে উপজেলাগুলোর কমিটি গঠনের ক্ষেত্রেও চমক থাকছে বলে বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি সদস্য ও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-১ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবাহান বলেন, কয়েক ভাগে বিভক্ত বরিশাল বিএনপি যে পথ ও গতি দুটোই হারিয়েছে তা গত ৪ ফেব্রুয়ারি নগরীর বরিশাল জিলা স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে হাইকমান্ড আঁচ করতে পেরেছে। ওই সমাবেশে নেতাকর্মীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকলেও অশৃঙ্খল পরিবেশ এবং সবাই নেতা হওয়ার প্রতিযোগিতার বিষয়টি শীর্ষ নেতারা ইতিবাচক হিসেবে নিতে পারেননি। সমাবেশে শেষে কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকায় ফেরার পূর্বে স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকা এবং রাজপথে আগামীদিনগুলো শক্তপোক্ত ভূমিকা রাখার তাগিদ দিয়েছেন। পাশাপাশি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক বিএনপির সম্ভ্রাব্য প্রার্থীদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার নেতাকর্মী, সর্বস্তুরের ভোটার ও সমর্থকদের পাশে দাঁড়িয়ে চাঙা করার পরামর্শ দিয়েছেন।

ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবাহান আরও বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও দলের সবধরনের বিরোধ ভুলে একসাথে আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে নামার জন্য নেতৃবৃন্দকে তাগিদ দিয়ে আসছেন। মূলত সেই নির্দেশনার আলোকেই বিতর্কিত কমিটি ভেঙে বা বিলুপ্ত করে প্রতিটি উপজেলায় সবার অংশগ্রহণে একটি করে গ্রহণযোগ্য কমিটি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ারের নেতৃত্বে বিভাজন এবং অভ্যন্তরীণ বিরোধে তৎসময়ের প্রভাবশালী বিএনপি নেতা এবায়দুল হক চাঁন, অ্যাডভোকেট বিলকিছ জাহান শিরিন, মহানগর বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক ও সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির জাহিদ নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করতে গিয়ে দলের ভেতরে তৈরি করেন একাধিক উপদল। যে কারণে আন্দোলন-সংগ্রামে বিভক্ত বিএনপি রাজপথে শক্তপোক্ত অবস্থান নিয়ে দাঁড়াতে পারছে না। সম্প্রতি সেই বিভাজন প্রকট রুপ নেয় গত ৪ ফেব্রুয়ারি বরিশাল জিলা স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে। যেখানে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সামনে বসে সংঘাতে জড়িয়ে পরে স্থানীয় বিএনপির একাধিক গ্রুপের কর্মী-সমর্থকরা। ফলে কেন্দ্রীয় নেতারা আগামীতে আন্দোলন-সংগ্রাম জোরদার করার ভাবনায় এবার কঠোর অবস্থান নিয়ে বিরোধ নিস্ফত্তির জন্য স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মাঠপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভ্রাব্য প্রার্থীদের নিজ নিজ নির্বাচনী আসনে স্ব-শরীরে গিয়ে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের চাঙা করার জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশ এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। অধিকাংশ নির্বাচনী আসনের সম্ভ্রাব্য প্রার্থীরা ঢাকায় বসবাস করে শুধুমাত্র বরিশালের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে কেন্দ্রীয় নেতাদের নজরে আসার চেষ্টা করছেন। প্রকৃতপক্ষে স্ব-স্ব নির্বাচনী এলাকার নেতাকর্মীদের পাশে কাউকেই পাওয়া যায়নি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) নির্বাচনী এলাকার সম্ভ্রাব্য প্রার্থী বিএনপির নির্বাহী কমিটি সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবাহান নির্বাচনী এলাকার দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ ভোটারদের সাথে একাধিক মতবিনিময় সভা করেছেন। গত ৫ ফেব্রুয়ারি ভাল্লুকশী বাজারের এক মতবিনিময় সভায় ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবাহান বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আপাতত নির্বাচন নিয়ে ভাবছিনা, শুধু আগামীতে সরকার বিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলনে যেতে নিজেদের ভেতরকার দ্বন্ধ-ফ্যাসাদ ভুলে গিয়ে সবাইকে এক কাতারে নিয়ে আসার জন্য কাজ করছি। তিনি আরও বলেন, দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে এই বিশেষ পদক্ষেপ বা কৌশলের কারণে স্থানীয় রাজনীতিতে বিএনপি আরও চাঙা হবে।

শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017
Developed By

Shipon