আজ বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৪:০৪ পূর্বাহ্ন
বরিশালে পানি আর পানি, জনদুর্ভোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক॥
উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমি বায়ু প্রবলভাবে সক্রিয় থাকায় বরিশালসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে অতিভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে করে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রোববার (০৬ আগস্ট) ভোর থেকে বরিশালে অতিভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এদিন গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়া লোকজনকে বাইরে বের হতে দেখা যায়নি। নগরের অধিকাংশ সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
চলতি মৌসুমে একদিনের রেকর্ড বৃষ্টিতে নগরীর নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নগরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ায় ছোট লঞ্চ (৬৫ ফুটের কম দৈর্ঘ্য) চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডব্লিউটিএ।
বরিশাল আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক প্রণব কুমার রায় জানায়, দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৯২ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বরিশালে। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে ৭০ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত।
তিনি জানান, আষাঢ় মাসে স্বাভাবিকের তুলনায় কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় শ্রাবণ মাসে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়েছে। এই পরিস্থিতি পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা বিরাজ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা তীব্র আকার ধারণ করছে। চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাত ছাড়িয়েছে ৩০০ মিলিমিটার। এক পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এদিন সন্ধ্যা ছয়টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ৩০৬ মিলিমিটার, বান্দরবানে ২৫৩ মিলিমিটার, রাঙ্গামাটিতে ১৪৪ মিলিমিটার, সন্দ্বীপে ১৪২ মিলিমিটার, সীতাকুণ্ডে ১০৯ মিলিমিটার, কক্সবাজারে ১০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এছাড়া বরিশাল সদরে ১০৭ মিলিমিটার, পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় ৩২৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে হালকা এবং ময়মনসিংহ, সিলেট ও খুলনা বিভাগে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হয়েছে।
সোমবার (০৭ আগস্ট) সন্ধ্যা পর্যন্ত ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পাবে। ঢাকায় দক্ষিণ-পশ্চিম অথবা দক্ষিণ দিক থেকে ঘণ্টায় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকবে ১০-১৫ কিলোমিটার। আগামী দুদিন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। বর্ধিত পাঁচদিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে।
অন্য এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।
এসব এলাকার নদীবন্দরকে এক নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া উপকূলে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার শঙ্কায় সব সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।