আজ শনিবার, ২৭ Jul ২০২৪, ০৯:১৭ পূর্বাহ্ন
বরিশাল জেলা ইজতেমা শুরু বুধবার
পল্লী জনপদ ডেস্ক ॥
চতুর্থবারের মত বরিশাল জেলা ইজতেমা বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে। ওইদিন বাদআসর আম বয়ানের মধ্যদিয়ে শুরু হবে ইজতেমার মূল আনুষ্ঠানিকতা। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে হেদায়েতি বয়ান শেষে বিশেষ দোয়া-মোনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হবে ইজতেমা।
এ উপলক্ষে ময়দান প্রস্তুতিতে নগরীর উপজেলা পরিষদের পেছনের অংশে বিশাল এলাকায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রায় ১০ একর এলাকাজুড়ে সামিয়ানা টানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে তাবলিগের সাথী, বিভিন্ন মাদরাসার ছাত্র এবং এলাকাবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে ইজতেমার মাঠ।
বরিশালে ইজতেমা আয়োজনে সহযোগিতা করেছে সদর আসনের এমপি, বরিশাল সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন। সম্পন্ন হয়েছে অজুখানা, পায়খানা, সুপেয় পানিসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের কাজও।
এ বছর মাঠ নির্মাণের জিম্মাদারের দায়িত্বে রয়েছেন সূরা সদস্য আবদুল্লাহ রাজা, নির্মাণ সদস্য সেলিম চৌধুরী, সূরা সদস্য সফিক ভাই, আমির হোসেন এবং মঞ্জুরুল ইসলাম সোহাগ। এছাড়া মাঠ পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার দায়িত্বে রয়েছেন বরিশাল হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা মারকাজ জামে মসজিদের সানি ইমাম মাওলানা আবদুর রহিম এবং ব্যবসায়ী মোঃ মাছুম চৌধুরী।
বরিশাল জেলা ইজতেমার ব্যাপারে মাঠের জিম্মাদার সেলিম চৌধুরী জানান, কাকরাইল মসজিদসহ দিল্লীর হযরত নিজামুদ্দিন (র.) মাদ্রাসার উচ্চ পর্যায়ের মুরুব্বীদের দল বরিশালে বুধবার সকালে এসে পৌছবেন। আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
মাঠ পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার দায়িত্বে থকা ব্যবসায়ী মোঃ মাছুম চৌধুরী জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের সহযোগিতায় করা হচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা। এছাড়া প্রায় ৫ শতাধিক টয়লেট নির্মাণ, বয়ানের জন্য ২৫টি মাইক, পর্যাপ্ত ওযুর পানির ব্যবস্থা করা, ইস্তেমা এলাকাজুড়ে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, বিকল্প হিসেবে বিদ্যুতের জন্য জেনারেটর, সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্য সেবায় অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণ, ফায়ার সার্ভিস’র জন্য স্থান নির্ধারণ। ইতোমধ্যে ষ্টেজ ও প্যান্ডেল তৈরী কাজ শেষে হয়েছে।
Exif_JPEG_420
ইজতেমা মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বিশাল মুসল্লীদের থাকার জন্য সেড নির্মাণ করার পাশাপাশি নির্মাণ করা হয়েছে বয়ানের জন্য স্টেজ। আশ-পাশে চলছে অজুখানা, পায়খানাসহ অন্যান্য স্থাপনা তৈরির কাজ। মহান আল্লাহপাকের করুনার আশায়- তার খুশির জন্য সকলেই স্বেচ্ছাশ্রমে ব্যস্ত। মুরব্বিরা জানান, বিগত বছর বরিশাল জেলা ইজতেমায় প্রায় ৪ লক্ষাধিক মুসুল্লীর আগমন ঘটেছিল। এবার প্রায় দ্বিগুন মুসুল্লী হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাই ইজতেমা প্রাঙ্গণের জমির পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে।
এছাড়াও ইজতেমায় বাক-প্রতিবন্ধীদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা থাকছে। বরিশালে ২৬০ জন বাক প্রতিবন্ধী রয়েছে। তাদের থাকা, খাওয়া, ওজুখানা, পায়খানাসহ সার্বিক বিষয়ে পৃথক ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে তাদের কোনো ধরনের দুর্ভোগ পোহাতে না হয়।
জানা গেছে, বরিশাল জেলার ১১টি থানা নিয়ে বরিশাল জেলা ইজতেমার আয়োজন করা হয়েছে। এই ১১টি থানাকে ১৯টি হালকা (ইউনিট) ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ঢাকা কাকরাইল মসজিদের মুরুব্বীদের (সূরার সদস্য) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেলা ইজতেমার আয়োজন করা হয়। মূল উদ্দেশ্য টুঙ্গীর তুরাগ তীরে অসংখ্য মুসুল্লীদের সংখ্যা কমিয়ে আনা। অর্থাৎ যারা বরিশাল জেলা ইজতেমায় আসবেন তাদের তুরাগ নদীর তীরে টঙ্গীর ইজতেমায় যাওয়ার প্রয়োজন নেই। মুরুব্বীদের সিদ্ধান্তের প্রথম বছরই ৩২ জেলার মধ্যে বরিশাল অন্তর্ভূক্ত হয়। ২০১৭ সালের জেলা ইজতেমায় বরিশাল না থাকলেও ঝালকাঠী জেলা তালিকায় ছিলো। ফলে অনেক বৃদ্ধ, অসচ্ছল এবং অসুস্থদের পক্ষেও ইজতেমায় অংশ নেয়ার সৌভাগ্য হয়েছে।
এবছর ইজতেমার নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি র্যাব সদস্যদের মোতায়েন করা হবে। আর তাবলিগ জামাতের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মীতো রয়েছেই।