আজ শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন
বিসিসি নির্বাচন : মেয়র পদে ১০, কাউন্সিলর ১৪৬ এবং সংরক্ষিত আসনে ৪২ জন মনোনয়নপত্র জমা দিলেন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে ১০ জন, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মিলিয়ে মোট ১৯৮ জন মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। মঙ্গলবার (১৬ মে) বিকেল ৫টায় নির্বাচন অফিস থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে রয়েছেন মেয়র প্রার্থী ১০ জন, কাউন্সিলর ১৪৬ জন এবং সংরক্ষিত আসনে ৪২ জন মনোনয়নপত্র দাখিলও করেছেন।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় পার্টির (জাপা) মনোনীত প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস, আওয়ামী লীগ মনোনীত আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত), ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, সাংবাদিক মো: আসাদুজ্জামান, স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন, জাকের পার্টির মিজানুর রহমান হাওলাদার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী হোসেন হাওলাদার মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এছাড়া কাউন্সিলর সাধারণ পদে ১৬৪ জন এবং সংরক্ষিত আসনে ৪২ জনসহ মোট ১৯৮ মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছে।
উল্লেখ্য, আগামি ১৮ মে যাচাই-বাছাই, প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৫ মে। এর পরেই প্রতিক বরাদ্ধ হবে ২৬ মে। জানা গেছে, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ দিনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় ৯ জন প্রার্থীকে ৭৭ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে নির্বাচন কমিশন।
এদিকে, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম এবং সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা প্রয়াত আহসান হাবিব কামালের ছেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবিরের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন তারা।
এ সময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের সঙ্গে দলের নেতাকর্মী এবং বিএনপি পরিবারের সন্তান কামরুল আহসান রুপনের সঙ্গে দলীয় কয়েকজন কর্মী ছিলেন।
মনোনয়নপত্র দাখিল শেষে মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ পুরো সৃষ্টি হয়নি, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের বিষয়টিও আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। আমরা দেখেছি কোনো কোনো প্রার্থী প্রতীক পাওয়ার আগেই প্রতীকসহ লিফলেট বিতরণ করছে, যেটা নির্বাচনী আচরণের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। আমি যেটুকু ওয়ার্ক করেছি বা মানুষের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছি তাতে মনে হয় হাতপাখা মার্কায় তারা অনেকে বেশি ভোট দেবেন।
তিনি বলেন, ফলাফল পাওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা কোনো অবস্থাতেই শঙ্কামুক্ত নই। আমরা চেষ্টা করবো নির্বাচনে সব ভোটারকে উপস্থিত করতে, আমাদের হাতপাখা প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য। বাকিটা সরকার কী করে, না করে সেটাও দেখার বিষয়। আমি চাই প্রতিটি সেন্টারে একজন ম্যাজিষ্ট্রেট এবং যথেষ্ট পরিমাণ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য যেন মোতায়েন করা হয়। আমি নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করব, এমন নির্বাচন উপহার দিন যা মানুষ গ্রহণ করবে। যেখানে স্বচ্ছতা থাকবে এবং মানুষ আশ্বস্ত হবে যে- এখানে গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে।
বিএনপি পরিবারের সন্তান স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন বলেন, সুষ্ঠুভাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পেরেছি। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বিগত ১৫ বছরে দেখেছি এ সরকারের অধীন ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে, উপ-নির্বাচন বা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কোনটাই সুষ্ঠু হয়নি। এখানে ইলেকশন ফিক্সিং হয়ে থাকে। সরকারি দল চায় না তাদের শরীক দল ছাড়া কেউ নির্বাচনে অংশ নিক, তাই মোটেও আশাবাদী নই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।
তিনি বলেন, এখানে আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ যে ফুফাতো ভাইকে জয়ী করবে, না গণতন্ত্রকে জয়ী করবে, মানুষের ভোটাধিকারকে প্রতিষ্ঠা করবে। এই সরকারের অধীন কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না এটা বহিঃবিশ্বের মানুষকে দেখানোর জন্য এবং সারাদেশের মানুষকে সচেতন করার জন্য আমি নির্বাচনে এসেছি। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায় সরকার ছাড়া এদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। কারণ তারা দিনের ভোট রাতে করে, কারচুপি করে, ফলাফল পরিবর্তন করে তাই এ সরকারের অধীন সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। জনসম্মুখে আমি প্রমাণ করতে চাই যে, বিগত ১৫ বছর যাবত আপনারা যা দেখেছেন, শুনেছেন বাস্তবেই এটা সত্য, এই সরকারের অধীন সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। আমি প্রতিবাদস্বরূপ এই নির্বাচনে এসেছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে সুযোগ করে দিলে আমার বিরুদ্ধে দুদকের চিঠি আসতো না, আমাকে হয়রানি করা হতো না। আমি মনোনয়ন সাবমিট করব এটা একটি মহল চায়নি। আমি মনে করি দুয়েক দিনের মধ্যে আমার নামে পুনরায় কোনো অভিযোগ আসবে। বর্তমান সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। বর্তমানে আমার বিএনপিতে কোনো পদ-পদবী নেই, তবে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলাম। আর এজন্য আমার নির্বাচনে অংশ নেওয়াটা সরকারের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।