আজ বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১০ অপরাহ্ন
আরিফ রহমান, অতিথি প্রতিবেদক॥
রাজনৈতিক মাঠে বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. খান আলতাফ হোসেন ভূলু একজন সাদা মনের মানুষ। তিনি বরিশাল জেলা পরিষদের প্রাক্তন প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী। তিনি ১৯৯৪ সাল হতে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ষাটের দশকের বরিশাল জেলার অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন ছাত্র নেতা ছিলেন। ১৯৬৬ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত ৬ দফা আন্দোলনে বরিশালের নেতৃত্ব প্রদান করেন। উল্লেখ্য যে, পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্বশাসনের আন্দোলনের ৬ দফাই ছিল বাঙালী জাতির মুক্তির সনদ। তিনি ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের বরিশালে ছাত্র সমাজের নেতৃত্ব প্রদান করেন। তিনি তখন বরিশাল বিএম কলেজের নির্বাচিত ভিপি (সহ-সভাপতি) ছিলেন। তিনি তার রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশের মানুষের, বিশেষ করে তার নির্বাচনী এলাকা বাকেরগঞ্জে ও বরিশালের (বর্তমানে বরিশাল-৫ ও ৬) দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর গণতান্ত্রিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তির জন্য। তিনি তার জীবনের উল্লেখযোগ্য সময় অতিবাহিত করেছেন কারাগারে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মর্মান্তিক মৃত্যুর পর তিনি ছিলেন বরিশালের অন্যতম প্রতিবাদকারী। ঐ সময় তার নেতৃত্বেই সর্বপ্রথম বরিশালে ১৯৭৫‘র ১৫ আগস্ট যে ঘৃন্য ঘটনা ঘটেছিল তার প্রতিবাদে একটি মিছিল বের করা হয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ১৭ আগস্ট ১৯৭৫ গ্রেপ্তার হন এবং সুদীর্ঘ ৩৪ মাস বরিশালের কেন্দ্রীয় কারাগারে কারাভোগ করেন। বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডাঃ মোখলেছুর রহমানের মৃত্যুতে বরিশাল জেলা পরিষদের প্রশাসকের পদটি শূন্য হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে বরিশাল জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ব প্রদান করেন। তিনি বরিশাল জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসাবে বরিশাল জেলার জনগণের উন্নয়নের জন্য সততা, নিষ্ঠা ও স্বচ্ছতার সাথে পালন করেছেন।
তিনি ১ সেপ্টেম্বর, ১৯৫১ সালে বাকেরগঞ্জের গোমার কৃষ্ণকাঠীতে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোঃ আবদুর রশিদ খান, মাতার নাম মোসাম্মত আম্বিয়া খানম, তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম, প্রাক্তন সিনিয়র শিক্ষিকা, বরিশাল কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এক ছেলে ব্যারিষ্টার আরাফাত হোসেন খান, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট।
শিক্ষা জীবন : তিনি বরিশাল সরকারী ব্রজমোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ইতিহাস বিভাগে কৃতিত্বের সাথে এম.এ পাস করেন। এছাড়া বরিশাল আইন কলেজ থেকে এল.এল.বি এবং এ.কে.স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করেন।
▪ ১৯৬৬ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা আন্দোলনে বরিশাল অংশগ্রহণ ও একমাত্র বরিশালে কারাবরণ করেন। ঐ কারাগারে তৎকালীন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক জনাব আব্দুল মমিনও ছিলেন।
▪ ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে প্রতিবাদী কন্ঠ ও আন্দোলনকে সংগঠিত করার জন্য ১৭ আগষ্ট ১৯৭৫ নুরুল ইসলাম মঞ্জু কর্তৃক প্রণীত তালিকা অনুযায়ী আমাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং সুদীর্ঘ ৩৪ মাস কারা ভোগের পর ১৯৭৮ সনে মুক্তি লাভ।
▪ ১৯৮৬-৮৭ সালের গণআন্দোলনে বরিশাল জেলার নেতৃত্ব প্রদানে তোফায়েল আহমদের সাথে ৮ মাসের উর্দ্ধে বরিশাল কারাগারে কারাবরণ করেন।
▪ ১৯৬২ সালে ছাত্রলীগে যোগদান এবং এ.কে. স্কুল শাখা ছাত্রগীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন।
▪ ১৯৬৪ সালে কুখ্যাত হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ ও এ.কে. স্কুল শাখার ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন ও স্কুল ছাত্র সংগ্রাম পরিষদে সভাপতির দায়িত্ব পালন।
▪ ১৯৬৬ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা আন্দোলনে বরিশাল অংশগ্রহণ।
▪ ১৯৬৭ সালে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিএম কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সহকারী সাধারণ সম্পাদক।
▪ ১৯৬৮ সালে বিএম কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক।
▪ ১৯৬৯ সালে বিএম কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত ভি.পি, ছাত্রলীগের বরিশাল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক পুনঃনির্বাচিত এবং সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি হিসাবে গণঅভ্যূত্থানে নেতৃত্ব প্রদান এবং ১৯৬৯ সনের ২৪ জানুয়ারী ১৪৪ ধারা ভঙ্গে নেতৃত্বদান যাতে এ.কে. স্কুল এর ছাত্র আলাউদ্দিন শহীদ হন।
▪ ১৯৭০ সালে ছাত্রলীগ বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত এবং ১৯৭০ সংসদ নির্বাচনে দক্ষিণ বাংলায় বঙ্গবন্ধুর সাথে প্রচার অভিযানে অংশগ্রহণ।
▪ ১৯৭১ সালে বিএম কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভিপি পদে পুনঃনির্বাচিত এবং বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ ও বাকেরগঞ্জ থানার নেতৃত্ব প্রদান।
▪ ১৯৭৪ সালে বরিশাল জেলা আওয়ামী-যুবলীগের সহকারী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত।
▪ ১৯৭৯ সালে বরিশাল জেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত।
▪ ১৯৮০ সালে বরিশাল জেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি নির্বাচিত।
▪ ১৯৮১ সালে বাকেরগঞ্জ থানার আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত ও বরিশাল জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক নির্বাচিত।
▪ ১৯৮২ সালে বাকেরগঞ্জ থানার আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত।
▪ ১৯৯০ সালে আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং পুলিশী নির্যাতন ও পেটোয়া বাহিনী কর্তৃক নভেম্বরে জীবননাশের জন্য গুলি বর্ষণ যা দৈনিক বাংলার বাণী ও ইত্তেফাকে প্রকাশিত হয়েছে।
▪ ১৯৯৬ সালে খালেদা জিয়া ও বিএনপি সরকারের পতনের আন্দোলনে সভানেত্রীর নির্দেশক্রমে বাকেরগঞ্জ ও বরিশালে সক্রিয়ভাবে আন্দোলনে অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব প্রদান।
▪ ২০১২ সালে বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য।
▪ বর্তমানে সিনিয়র সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ কৃষকলীগ, কেন্দ্রীয় কমিটি।
▪ ১৯৭৯ সালে বাকেরগঞ্জ-৬ [বর্তমানে বরিশাল-৬] আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।
▪ ১৯৮৬ সালে বাকেরগঞ্জ-৬ [বর্তমানে বরিশাল-৬] আসনে ১৫ দলের মনোনীত প্রার্থী হিসাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ।
▪ ১৯৯৪ সাল হতে ২০১৯ সাল বাংলাদেশ কৃষক লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত।
▪ ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী, দেশরত্ন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগের সমর্থিত চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে বরিশাল জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ।
▪ ১৯৭১ সাল: প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি- কে.জি.এস.স্কুল এ্যান্ড কলেজ, গোমা-দুধল, বাকেরগঞ্জ, বরিশাল।
▪ ২০০০ সাল হতে অদ্যাবধি: সভাপতি, কে.জি.এস.স্কুল এ্যান্ড কলেজ, গোমা-দুধল, বাকেরগঞ্জ, বরিশাল।
▪ ২০১৭ সাল: কৃষক প্রতিনিধি, পরিচালনা সংসদ, ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম-ফেজ- ২ প্রজেক্ট (এনএটিপি-২), কৃষি ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
▪ ১৯৭৫ সালের মর্মান্তিক ১৫ আগস্ট, প্রকাশ: দৈনিক কালের কণ্ঠ, শনিবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৯
মর্মান্তিক সেই ১৫ আগস্ট, প্রকাশ: দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন, রবিবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৭