আজ শনিবার, ২৭ Jul ২০২৪, ০১:৪৩ পূর্বাহ্ন

Logo
শিরোনামঃ
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারাগারে

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারাগারে

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারাগারে

পল্লী জনপদ ডেস্ক॥

প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুরের অভিযোগে রাজধানীর রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার (২৯ অক্টোবর) রাতে তাকে ডিবি অফিস থেকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়। এসময় তাকে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়।

অপরদিকে, ফখরুলের জামিন চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবী। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

রোববার রাত ৮টা ১০ মিনিটে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মির্জা ফখরুলের গাড়ির সামনে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা নানা দলীয় শ্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশ ও আইনজীবীদের মধ্যে এসময় ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।

এর আগে রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গুলশানের বাসা থেকে মির্জা ফখরুলকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। তখন বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, সকাল ৯টার আগে থেকে মহাসচিবের গুলশানের বাসার সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেয়। পরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুরের অভিযোগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ ৫৯ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। রোববার রাজধানীর রমনা থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়।

এ সময় ফখরুল-আব্বাস ছাড়াও মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, আহমেদ খান, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ভিপি জয়নাল, মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম ডোনার ও সদস্য সচিব আমিনুল হক।

এর আগে শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ শুরুর আগে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে হামলা ও ভাঙচুর চালায় বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা গাছের ডাল ভেঙে ও হাতের লাঠি দিয়ে বাসভবনের নামফলক ভেঙে ফেলে। ভবনের ভেতরে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।

পল্টন থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন বলেন, পুলিশ হত্যার ঘটনায় বিএনপির সিনিয়র নেতাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। তবে মামলায় মির্জা ফখরুল ছাড়াও আর কাকে আসামী করা হয়েছে সে ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত করে কিছু বলেননি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ডিবি তুলে আনার বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে এসেছি। পরে যদি আমরা তেমন কিছু পাই, তদন্তের পর, তখন বলা যাবে। এ মুহূর্তে আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে এসেছি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্ত্রী রাহাত আরা বেগম বলেন, এভাবে যে তাকে নিয়ে যাবে এটা আামি কল্পনা করতে পারি নাই, আমি মেনে নিতেই পারছি না। তার যে অসুস্থতা সেখানে তার থাকার কথা নয়। গুলশান ৭১ নম্বর সড়কে ‘দিলরুবা’ অ্যাপার্টমেন্ট নামের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলার বাসায় থাকেন বিএনপি মহাসচিব। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য আগের উত্তরার ভাড়া বাসা পরিবর্তন করে গুলশানে আসেন তারা।

রাহাত আরা বলেন, ওরা সকালে আসলো, ওই সময় আমরা চা খাচ্ছিলাম। এসে প্রথমে বললো যে স্যার আপনার সাথে কথা বলবো। কিছু কথাবার্তা বলে নিচে চলে গেলো। যাওয়ার সময়ে তারা বাসার ভেতরের সিসি ক্যামেরার ডিভাইস এবং এই অ্যাপার্টমেন্টে নিচের সিসি ক্যামেরার ডিভাইস নিয়ে গেছে। এর ঠিক ১০ মিনিট পরে আবার তারা ফিরে আসেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার যতটুকু ধারণা তারা নিচেই ছিল। ১০ মিনিট পরে আবার আসলো এবং বলল যে, স্যার আপনাকে আমাদের সঙ্গে যেতে হবে। যা বলে প্রত্যেকবার। বলে স্যার, উপরের অর্ডার আছে, আপনাকে যেতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমার বলার কোনও ভাষা নেই। ৭৫ বছর বয়সী একজন লোক। তিনি প্রচণ্ড অসুস্থ। এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অবিলম্বে মুক্তি চেয়েছেন তার জ্যেষ্ঠকন্যা ড. শামারুহ মির্জা। তিনি জানান, আব্বুর বয়স ৭৫ এবং তিনি গত রাতেও প্রচণ্ড অসুস্থ ছিলেন। পুলিশের টিয়ার গ্যাস তার ফুসফুসে গেছে এবং তিনি রাতেই ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। আমি অবিলম্বে আমার আব্বুর মুক্তি চাই।

দিনভর ডিবি কার্যালয়ে রাখার পর রাতে আদালতে তোলা হয় বিএনপি মহাসচিবকে।

শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017
Developed By

Shipon