আজ বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন
পল্লী জনপদ ডেস্ক ॥
সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর বরিশাল নগরীর কালী বাড়ি রোডের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সেনা সদস্যদের বাধা উপেক্ষা করে বাড়িটির গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে গুঁড়িয়ে দেন তারা। এর আগে বাড়িটিতে হামলা হতে পারে আশঙ্কায় সেটি ঘিরে রাখে সেনা সদস্যরা। বুধবার রাত সোয়া ১২টার দিকে গুঁড়িয়ে দেয়া হয় বাড়িটি।
নগরীর কালীবাড়ী রোডের ‘সেরনিয়াবাদ ভবন’ এ বুলডোজার নিয়ে এসে শতাধিক লোক ভাঙচুর শুরু করে। বুলডোজার নিয়ে আসা হয়েছে সিটি করপোরেশন থেকে।
সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগেরও সভাপতি এবং শেখ হাসিনার আত্মীয়। হাসানাতের ছেলে সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র। তিনি এই বাড়িতেই থাকতেন।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, সাদিক আবদুল্লাহ এই ভবনকে “টর্চার সেল” হিসেবে ব্যবহার করতেন। আওয়ামী লীগ বিরোধী অনেককে এখানে আটকে রেখে নির্যাতন করা হতো বলে অভিযোগ রয়েছে।
মাহফুজুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, এই বাড়ি ছিল ফ্যাসিবাদের প্রতীক। এখানে মানুষ নির্যাতিত হয়েছে, শোষিত হয়েছে। আমরা এই অভিশপ্ত বাড়ি আর বরিশালে থাকতে দেব না।
বিক্ষোভকারী ইয়াকুব মিয়া বলেন, সাদিক আবদুল্লাহর এই বাড়ি ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির স্মারক। তাই আমরা এটিকে ধ্বংস করছি।
এর আগেও এই ভবনে হামলা হয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্ট উত্তেজিত জনতা এই ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। তখন ভবনের ভেতরে আটকা পড়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়রসহ তিনজন নিহত হন।
উল্লেখ্য, এর আগে বুধবার রাতে আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার করা হয়। পলাতক অবস্থায় তার এই বক্তব্য প্রচারকে ঘিরে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে শিক্ষার্থী ও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়াদের মাঝে। দিনেই ঘোষণা দেয়া হয় শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারের সময় ধানমন্ডির ৩২ এর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হবে। রাত আটটার দিকে দলে দলে শিক্ষার্থী ও বিক্ষুব্ধ মানুষ ধানমন্ডি-৩২ এর দিকে যেতে থাকেন। ফটক ভেঙে শিক্ষার্থী ও জনতা ভবনের ভেতরে প্রবেশ করেন। তাদের কেউ কেউ হাতে থাকা লাঠি ও ভারি বস্তু দিয়ে স্থাপনার বিভিন্ন অংশে ভাঙচুর করেন।
সেরনিয়াবাদ ভবন ভাঙার ব্যাপারে বরিশাল মহানগর ছাত্রদল প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সাবেক কাউন্সিলর, সাবেক মহানগর বিএনপির ১নং সদস্য আ ন ম সাইফুল আহসান আজিম তার ফেইজবুক পেইজে লিখেন- ‘আল্লাহর বিচার হবেই। আজ মনটা একটু ভালো লাগলো, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারী মাস। সাদেক আব্দুল্লাহ তখন ঐতিহাসিক ভোট ডাকাতীর মাধ্যমে মেয়র হয়েছেন।আমি নির্বাচনী রিকাউন্ট মামলা করি। তিনি আমাকে মামলা প্রত্যাহার করতে বলেছিলেন।যার স্বাক্ষি কাউন্সিলর মান্না (২১)। তার কথা না শোনায় মেয়র হয়ে, বুলড্রেজার দিয়ে আমার বাবার রেকর্ডিয় জমিতে নির্মিত আমার দোকার ঘর ভেংগে দিয়েছেন। মনে অনেক কস্ট পেয়েছি, নিরবে দেখেছি আর চোখ থেকে পানি ঝরেছে। কেউ শান্তনাও দেয়নি। আমার মৃত বাবার আত্বায়ও কস্ট পেয়েছে। আজ সেই বুল ড্রেজার, তার বাড়িও গুড়িয়ে দিয়েছে। সময়ের ব্যাপার মাত্র।কেউ সাদেক ভক্ত কস্ট নিয়েন না।সবই রিটার্ন। সেইম ম্যাডামকে নিজ বাড়ী থেকে নামিয়ে দিয়েছেন এখন তার রিটার্ন। সময় সব কিছুর জবাব দেয়। খেলা সমান-সমান।এগুলো ভালো নয়। আসুন এগুলো আর না হয়। সবাই দেশকে ভালোবেসে সামনের দিকে এগিয়ে যাই।’