আজ শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৩১ অপরাহ্ন

Logo
শিরোনামঃ
গণতন্ত্রের ধারা বহমান রাখতে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার : তারেক রহমান আমাকে মোয়া বানানো হচ্ছে : সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন ড. মুহাম্মদ ইউনূস কখনোই বাংলাদেশের গর্বিত ইতিহাস মুছে ফেলার কথা বলেননি : প্রেস সচিব পিরোজপুরে গভীর রাতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাইভেটকার খালে, শিশুসহ নিহত ৮ কোন সরকারি চাকরিজীবী চাকরি ছাড়ার পর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না : জামায়াত দিশেহারা আ’লীগ, শীর্ষ নেতারা আত্মগোপনে, বেশিরভাগ ভারতে ঠাঁই! দ্রব্যমূল্য শিগগিরই সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবশেষে বরখাস্ত উর্মির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা এবার ঝালকাঠি উপজেলা পরিষদের সিএ বরখাস্ত বিশ্বের প্রভাবশালী মুসলিম ব্যক্তিত্বের তালিকায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস
ময়মনসিংহে ১১০ প্রকল্পের পুরো অর্থ আত্মসাৎ

ময়মনসিংহে ১১০ প্রকল্পের পুরো অর্থ আত্মসাৎ

ময়মনসিংহে ১১০ প্রকল্পের পুরো অর্থ আত্মসাৎ

পল্লী জনপদ ডেস্ক॥

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ১১০ প্রকল্পে বরাদ্দ হওয়া টাকা, চাল ও গম আত্মসাতের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ পড়েছে।

বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ে অভিযোগ করেন উপজেলার মইলাকান্দা ইউনিয়নের মইলাকান্দা গ্রামের ফাইজুল হক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক মো. আবুল হোসেন।

অভিযোগকারী ফাইজুল হক বলেন, একটি চক্র ৯৭টি প্রকল্পের ১ কোটি ৮০ লাখ ৭৬ হাজার ৮২৫ টাকা; ৬টি প্রকল্পে বরাদ্দ ৬৩ দশমিক শূন্য ৪৯ টন চাল এবং ৭টি প্রকল্পে বরাদ্দ ৬৩ দশমিক শূন্য ৪৯ টম গম আত্মসাৎ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতেই লুটপাটকারীদের চিহ্নিত করতে এ অভিযোগ দিয়েছি।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার সোহেল রানা পাপ্পু যুগান্তরকে বলেন, ‘এসব প্রকল্প প্রণয়ন ও বরাদ্দ দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন এমপি স্যার। আমরা কাজ ছাড়া কোনো প্রকল্পের অর্থ, চাল ও গম ছাড় দিইনি।’

এ সম্পর্কে নাজিম উদ্দিন আহমেদ এমপি বলেন, ‘আমি এলাকার উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ দিয়েছি। বরাদ্দের টাকা, চাল ও গম দিয়ে যারা প্রকল্প নিয়েছে, তারা প্রকল্প বাস্তবায়ন বা উন্নয়ন করবেন। প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করার তো সুযোগ নেই! কেননা প্রশাসন প্রকল্প এলাকা ঘুরে, কাজ দেখে তারপর প্রকল্পের টাকা ছাড় দেয়।’

অভিযোগে বলা হয়, একই স্থানকে ভিন্ন নাম দেখিয়ে প্রকল্প তৈরি, অস্তিত্বহীন প্রকল্পের নাম দেখিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা/কাবিটা ও টিআর) কর্মসূচির আওতায় যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, কাজ না করেই তা লুট করা হয়েছে।

১১০টি প্রকল্পের প্রজেক্ট প্রোফাইল কোথাও খোঁজে পাওয়া যায়নি। সোনামপুর মোড় থেকে ঘাটেরকোনা পর্যন্ত রাস্তা পুনর্নির্মাণে বরাদ্দ ৪ লাখ টাকার প্রকল্প সম্পূর্ণ ভুয়া। একই সড়ককে দুটি নামে অনন্তগঞ্জ বাজার থেকে খানপাড়া পর্যন্ত রাস্তা এবং খানপাড়া এলজিইডির রাস্তা থেকে খানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তা পুনর্নির্মাণ প্রকল্পের ৯ লাখ টাকা লুট হয়েছে। ভাংনামারী ইউনিয়নের বারুয়ামারী রোকন মাস্টারের বাড়ি তাগার মোড় পর্যন্ত রাস্তা পুনর্নির্মাণে ১২ টন, নাওভাঙ্গা কালাম কেরানির বাড়ি থেকে নতুন ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তা পুনর্নির্মাণে ১১.০৪৯ মেট্রিক টন চাল লুট করা হয়েছে। এ এলাকায় কালাম কেরানি নামে কোনো ব্যক্তি নেই, তাগার মোড় নামেও কোনো স্থান নেই। ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।

অভিযোগে আরও বলা হয়, বোকাইনগর ইউনিয়নের মানিকদির থেকে তেলিহাটি পর্যন্ত রাস্তা পুনর্নির্মাণে ৯ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। বাস্তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এ রাস্তাটি নতুন নির্মাণ করেছে। প্রকল্পের নাম দেখিয়ে অর্থ লুটে নিয়েছে চক্রটি।

অচিন্তপুর ইউনিয়নের মহিস্মরণ বাজার থেকে লংক্ষাখোলা ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তা মেরামতের নামে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা লুট করা হয়েছে।

বাস্তবে এ ধরনের সড়ক এই ইউনিয়নে নেই। এছাড়া ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নের বায়ড়াউড়া পাকা সড়ক থেকে নয়ন মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা কোনো কাজ ছাড়াই উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। বায়ড়াউড়া গ্রামে কোনো পাকা সড়ক নেই, প্রকল্পও নেই।

অচিন্তপুর ইউনিয়নের গাগলা মোড় থেকে আবুল কালামের বাড়ি হয়ে সীমানা পর্যন্ত ভিন্ন নামে একাধিক প্রকল্প বরাদ্দ দিয়ে কাজ ছাড়াই অর্থ, চাল ও গম লুটে নেওয়া হয়েছে। কবির উদ্দিনের রাইস মিল থেকে মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা মেরামতে ১ লাখ ১৪ হাজার টাকা ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

সোনামপুর মোড় থেকে ঘাটেরকোনো রাস্তা মেরামতের নামে ভিন্ন ভিন্ন নামে একাধিক প্রকল্প দিয়ে কোনো কাজ ছাড়াই বরাদ্দ টাকা, চাল ও গম আত্মসাৎ করা হয়েছে। কান্দাপাড়া পাকা রাস্তা থেকে তাহেরপুর পর্যন্ত রাস্তা মেরামত প্রকল্পের নামে বরাদ্দ ১ লাখ ১০ হাজার টাকা লুট করা হয়েছে। তাহেরপুর নামে কোনো গ্রাম এ ইউনিয়নে নেই।

অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, মনিপুর থেকে রফিক মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

পাঁচাশি চার রাস্তা মোড় থেকে ভাষাপীঠ বিল পর্যন্ত রাস্তা মেরামত প্রকল্পে ১ লাখ ১৪ হাজার টাকা ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে লুট করা হয়েছে। ভাষাপীঠ বিল নামে গৌরীপুর উপজেলায় কোনো বিল নেই।

বড়বাজার থেকে ঘাট পর্যন্ত রাস্তা মেরামত খাতে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ নামে উপজেলায় কোনো রাস্তা নেই। নাপ্তের আলগী বাজার থেকে আবুল কালামের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত খাতে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে। বাস্তবে এটি নতুন পাকা সড়ক। এছাড়াও অন্যান্য প্রকল্পেও কোনো কাজ দেখা যায়নি। -যুগান্তর

শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017
Developed By

Shipon