আজ বুধবার, ১৬ Jul ২০২৫, ০৫:৪৬ পূর্বাহ্ন
পল্লী জনপদ ডেস্ক ॥
তেল আবিব ও হাইফা শহরকে লক্ষ্য করে সোমবার (১৬ জুন) রাতে আবারও ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক ঘোষণায় জানানো হয়, ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) ‘‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’’-এর নবম ধাপ শুরু করেছে। হামলা মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত চলতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
আইআরজিসির একজন মুখপাত্র বলেন, “আমরা ইহুদিবাদীদের শান্তিতে থাকতে দেব না।”
এর আগে, সোমবার সন্ধ্যায় ইসরায়েল একযোগে ইরানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় তেহরানের পাশের একটি সামরিক ঘাঁটি, কেরমানশাহর ফারাবি হাসপাতাল এবং ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান ব্রডকাস্টিং (আইআরআইবি) ভবন।
বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার ভবনে হামলার পরপরই ইরান পাল্টা জবাব দেয় ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ইরান থেকে ছোড়া ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই প্রতিহত করা হয়, তবে কিছু ধ্বংসাবশেষ উত্তর ইসরায়েলের কয়েকটি এলাকায় পড়ে।
হামলার আগে ইরান সতর্ক করে জানায়, ইসরায়েলের এ১২ ও এন১৪ চ্যানেলের কর্মীদের যেন ভবন খালি করতে বলা হয়। ইরানের দাবি, আইআরআইবি ভবনে হামলার জবাবেই এ পদক্ষেপ।
গত শুক্রবার (১৩ জুন) থেকে সরাসরি হামলা-পাল্টা হামলায় জড়িয়েছে ইরান ও ইসরায়েল। চারদিন ধরে চলমান এই উত্তেজনা আরও বিস্তৃত ও জটিল রূপ নিচ্ছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, তার দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের পরিসর বাড়াতে চায় না, তবে কোনো ধরনের হামলা হলে সমুচিত জবাব দেবে।
সোমবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে এক ফোনালাপে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, ইসরায়েলের আগ্রাসনে ইরানে বেসামরিক নাগরিক, বিজ্ঞানী ও সামরিক নেতারা নিহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, এই যুদ্ধ ইরান শুরু করেনি, কিন্তু আমরা হামলার মাত্রা অনুযায়ী জবাব দেব।
পেজেশকিয়ান আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনায় ইরানের অংশগ্রহণ পুরোপুরি জায়নবাদী ইসরায়েলের হামলা বন্ধের ওপর নির্ভর করে।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার বরাত মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন জানায়, এরদোয়ান ফোনালাপে পেজেশকিয়ানকে বলেছেন, সংঘাত কমাতে এবং পারমাণবিক আলোচনায় ফিরে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে সহায়তা করতে তুরস্ক মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত।
হত্যার পরিকল্পনায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরোধিতার প্রতিক্রিয়ায় এ মন্তব্য করেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী।
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে ‘সরিয়ে দেওয়াই’ চলমান যুদ্ধের ‘সবচেয়ে সহজ’ উপায় বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলি পরিকল্পনায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভিটোর প্রতিক্রিয়ায় সোমবার এমন মন্তব্য করেন তিনি।
ট্রাম্প প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার বরাতে রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ট্রাম্প চান না যে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতাকে হত্যা করা হোক।
জরুরি ভিত্তিতে ইরানের রাজধানী তেহরান শহরের বাসিন্দাদের শহরটি খালি করতে বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্ট তিনি এ কথা বলেন।
ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের যুদ্ধের মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প কেন এমন কথা বললেন সেটি স্পষ্ট নয়। তবে ইসরায়েল শহরটিতে বড় ধরনের হামলা করতে পারে, এটি তার ইঙ্গিত হতে পারে।
ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প আরও বলেছেন, ‘ইরানের পারমাণবিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করা উচিত। আমি তাদের চুক্তি স্বাক্ষর করতে বলেছি। কী লজ্জা, আর মানবজীবনের কী অপচয়। আমি বারবার বলেছি, ইরান কোনোভাবেই পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হতে পারবে না। জরুরি ভিত্তিতে তেহরান খালি করে দিন।’