আজ বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৩৩ অপরাহ্ন
পল্লী জনপদ ডেস্ক ॥
পটুয়াখালীর ‘৩৬ জুলাই’ স্মৃতিস্তম্ভ এবং বরগুনায় বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) গভীর রাতে পটুয়াখালীর ঝাউতলায় জুলাই আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে নির্মিত ‘৩৬ জুলাই’ স্মৃতিস্তম্ভের পাদদেশে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। অপরদিকে, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে বরগুনার আমতলী উপজেলার বাঁধঘাট চৌরাস্তা এলাকায় ‘স্বর্ণা পরিবহন’ নামের বাসে আগুন দেওয়া হয় বলে আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান জানান। আমতলী উপজেলায় সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়ার পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তা নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।
বাসের ভেতরে কেউ না থাকায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে বাসটির প্রায় ৭০ থেকে ৮০ ভাগ পুড়ে গেছে বলে আমতলী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর মো. আবু হানিফ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “স্বর্ণা পরিবহন নামের বাসটি সড়কের পাশে পার্কিং করে রাখা হয়েছিল। মধ্যরাতে হঠাৎ ওই বাসটিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
“মুহুর্তেই আগুন পুরো বাসে ছড়িয়ে পড়লে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।” ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় রাতে অভিযান চালিয়ে আমতলী থেকে পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে। আটককৃতরা হলেন- আমতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আতাউর রহমান রাসেল, যুগ্ম-আহ্বায়ক পারভেজ খান, মাদক ও চুরির ১১ মামলার আসামি আমতলী পৌর যুবলীগের সদস্য তন্ময় গাজী, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য কাওছার আহমেদ রনি ও সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী কাওছার আহমেদ রনি।
বরগুনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আল মামুন শিকদার বলেন, যেকোনো বিশৃঙ্খলা ও অপ্রিতীকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। পুলিশের কয়েকটি টিম টহল দিচ্ছে।
এদিকে, পটুয়াখালীর ঝাউতলায় জুলাই আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে নির্মিত ‘৩৬ জুলাই’ স্মৃতিস্তম্ভের পাদদেশে অগ্নিসংযোগ ঘটনার চিহ্ন স্থানীয়রা শুক্রবার সকালে দেখতে পেয়ে হতবাক হন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অগ্নিসংযোগের একটি ভিডিওও ছড়িয়ে পড়ে। জুলাই যোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, শহীদদের প্রতি অসম্মান দেখাতে পরিকল্পিতভাবেই এই কাজ করা হয়েছে। আমরা গতকাল সারাদিন পাহারায় ছিলাম। স্মৃতিস্তম্ভ যেন কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে সতর্ক আছি। প্রশাসনের প্রতি দাবিভিডিও দেখে দায়ীদের শনাক্ত করতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারাও জানান, রাতে কারা এ কাজ করেছে তা জানা যায়নি। সকালে স্মৃতিস্তম্ভের নিচে আগুনের কালো দাগ দেখে তারা বিস্মিত হন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) তারেক হাওলাদার বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আগুনে স্মৃতিস্তম্ভের বড় কোনো ক্ষতি হয়নি, শুধু নিচের দিকে কিছুটা কালো দাগ রয়েছে। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দোষীদের শনাক্ত করা হবে।’
এদিকে পুলিশ ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।