আজ রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০২:১৭ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
পটুয়াখালী পৌরসভায় করিম মৃধা কলেজের সমাজ কল্যাণ বিভাগের প্রফেসর মোঃ দেলোয়ার জাহান এবং গলাচিপা উপজেলার গলাচিপা মহিলা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে পটুয়াখালী সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। থানায় অভিযোগের এস এল নম্বর ৪১৬৪/২৪, তারিখ ২৯/৯/২০২৪।
থানায় অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন যে, মোঃ ফোরকান আহমেদ, মোঃ জসিম উদ্দিন, মোঃ আমিনুল ইসলাম, মোঃ নজির মৃধা, মোঃ ঈমানুল ইসলাম, আঃ জব্বার মৃধাসহ ১৩ জনের সমন্বয়ে ২০২৩ সালের ১৮/০৪/২৩ এবং ৩০/০৭/২৩ তারিখের ৩১৯৪,৩১৯৫, ৬৭০১৭ নং সাব কবলা দলিলমুলে দাতা মরহুম অধ্যক্ষ মমিন উদ্দিন খানের ওয়ারিশগণ এবং মফেজ উদ্দিন প্যাদার ওয়ারিশগণের নিকট থেকে ১১.৫০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। ১লা আগষ্ট জমির চারপার্শ্বে ঘেরা দাতাদের পূর্বাক্ত বাউন্ডারি ওয়ালের কিছু ভাংগা অংশের কাজ করিতে গেলে মোঃ জাকির হোসেন, বেলাল প্যাদা, শহিদুল প্যাদা, সুলতান প্যাদা ও মোঃ দেলোয়ার জাহান এর নেতৃত্বে কতিপয় স্থানীয় সংঘবদ্ধ সন্ত্রাস টাইপের লোকজন বাঁধার সৃষ্টি করে। ৫ আগষ্ট সরকার পরির্তনের রাতে মোঃ জাকির হোসেন ও বেলালের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তাদের জমিতে থাকা টিনের ঘরসহ অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে যান বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন। এমনকি বর্ণিত লুটের দৃশ্য পার্শ্ববর্তী আনোয়ারা আঃ লতিফ হাফিজিয়া মাদ্রাসার সিসিটিভি ফুটেজে রয়েছে বলে জানান। এ প্রেক্ষিতে উভয়পক্ষ দুইজন উকিলের সমন্বয়ে মীমাংসার জন্য এ্যাডভোকেট মোঃ মিলন চোধুরীর চেম্বারে হাজির হন। দলিলপত্রাদি দেখে এ্যাডভোকেট মোঃ মিলন চোধুরী ও এ্যাডভোকেট মোঃ নাজমুল হক আইনি মতামত মোঃ ফোরকান আহম্মেদ গংদের পক্ষে প্রদান করেন।
পরবর্তীতে মোঃ ফোরকান আহম্মেদ গং ২৭/০৯/২৪ ইং তারিখে বাউন্ডারি ওয়ালের কাজ করিতে গেলে মোঃ জাকির হোসেন, মোঃ দেলোয়ার জাহান, মোঃ মাহবুব হোসেন, মাজেদা বেগমসহ ১০-১২ জন লোক কাজে বাঁধার সৃষ্টি করে, প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং লেবারদের হাত থেকে মালপত্র কেড়ে নেয়, ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। এমনকি বিভিন্ন লোক মারফত টাকা-পয়সা দাবির বিষয়টি অভিযোগে উল্লেখ করেন। তাদের চাহিদা মত চাঁদা পরিশোধ করলে তারা আর বাধার সৃষ্টি করবে না বলে জানান। মোঃ জাকির হোসনে একজন ধুরন্দর প্রকৃতির লোক, বিভিন্ন সময় নিজেকে সচিবের বন্ধু, রাজনৈতিক নেতা পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করে বেড়ায়। মোঃ দেলোয়ার জাহান করিম মৃধা কলেজের একজন শিক্ষক পরিচয়ে ছাত্রদের দ্বারা নির্যাতনের ভয়ভীতি দেখান। মোঃ মাহবুব হোসেন একজন নির্বাচন কর্মকর্তা পরিচয় দেন এবং পুলিশের ডিআইজি ও সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে হয়রানির ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। বিবাদীদের চাহিদা মত টাকা না দিলে তারা প্রাণনাশের হুমকি দেন এবং তাদের সম্পত্তি হতে উৎখাত করবেন বলে জানান।
মোঃ ফোরকান আহমেদ অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন যে, বর্ণিত জমির হোল্ডিং নাম্বার, বিদ্যুৎ এবং পয়ঃনিষ্কাষণের সকল তথ্যাদি পটুয়াখালী পৌরসভা থেকে তাদের নামে প্রদান করা হয়েছে। বর্ণিত জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণের বিষয়টি অবগত হওয়ার পর জাকির গং চাঁদার জন্য উৎপাত শুরু করে। তারা কতিপয় সরকারি চাকুরিজীবি হওয়ায় জাকির গং চাঁদার জন্য এসব প্রতিবন্ধতা সৃষ্টি করিতেছে।
মোঃ ফোরকান আহম্মেদ জানান যে, দলিল দাতাগণ ১৯৬৮ সাল থেকে বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে জমিতে ভোগ দখলে রয়েছেন। শুধুমাত্র চাঁদার টাকার জন্য বিভিন্নভাবে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ক্যাম্প কমান্ডার, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পটুয়াখালীতেও অভিয়োগ দেয়া আছে। বর্ণিত চাঁদাবাজির বিষয়ে প্রতিকার পাওয়ার জন্য থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ ব্যাপারে দেলোয়ার জাহান জানান, আমি কারো কাছে চাঁদার টাকা দাবি করিনি। প্রয়োজনে প্রশাসন তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
পটুয়াখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জসীম উদ্দিনের নাম্বারে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।