আজ শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:২৩ পূর্বাহ্ন
পল্লী জনপদ ডেস্ক ॥
পাচার হওয়া টাকা ফেরাতে বিশ্বনেতাদের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এছাড়া দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সভায় অংশ নিয়ে আসিয়ানের সদস্যপদ পাওয়ার বিষয়ে আশা প্রকাশ করেন তিনি। একই সঙ্গে বাংলাদেশের মতো নতুন সমাজ বিনির্মাণে তরুণদের সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমি ফোরামের দ্বিতীয় দিনে ব্যস্ত দিন পার করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূস। এদিন মূল ইভেন্টের পাশাপাশি সাইডলাইনে বেশ কয়েকটি দেশের সরকার, রাষ্ট্র ও সংস্থার প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন তিনি।
ফোরামে আসিয়ান নেতাদের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহীম ও ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যরা। এসময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস আসিয়ানের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে বলেন, এশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নের ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে আসিয়ান।
এজন্য তিনি বেশ কিছু পরামর্শ তুলে ধরেন। বলেন, বাংলাদেশ আসিয়ানের অংশ হতে চায় এজন্য তিনি আসিয়ানের নতুন চেয়ারম্যান আনোয়ার ইব্রাহীমের সহযোগিতা চান।
তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশি তরুণদের ভূমিকা তুলে ধরেন। তরুণদের দক্ষ করে গড়তে ও কর্ম সংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
এর আগে দ্বিতীয় দিনে মূল ইভেন্টের এক ফাঁকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি, বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপ, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়েংটার্ন সিনাওয়াত্রার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় ফিলিপ্পো রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
এসব সাক্ষাৎ ও বৈঠকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে বিশ্ব নেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা, একই সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ফেরত আনতেও সবার সহযোগিতা কামনা করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শেখ হাসিনার ১৬ বছরের দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনামলে বাংলাদেশে কিভাবে প্রকাশ্যে লুটপাট সংঘটিত হয়েছিল তা খতিয়ে দেখার জন্য বাংলাদেশে শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ, সাংবাদিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাকে পাঠাতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান অধ্যাপক ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুেফ সিদ্দিকী, এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সচিব লামিয়া মোর্শেদ এবং জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক আরিফুল ইসলাম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক হয়েছে। গ্র্যান্ডি বলেছেন, তাঁর সংস্থা রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করার লক্ষ্যে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে। সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বৈঠকের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর গ্র্যান্ডি এই মন্তব্য করেন।
এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টা ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট, পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট এবং থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদাভাবে মিলিত হয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে বিশেষ করে এই বছরের শেষ দিকে একটি বড় বৈশ্বিক সম্মেলন আয়োজনের জন্য জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির সহায়তা চাওয়ার পর গ্র্যান্ডি বলেন, ‘আমরা আপনাদের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’ জবাবে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আপনার কণ্ঠস্বর আরো সোচ্চার হতে হবে।’
এ সময় অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গা সংকটের ওপর সারা বিশ্বের মনোযোগ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘অতিরিক্ত প্রায় এক লাখ শরণার্থীর আগমন বাংলাদেশের ওপর আরো বোঝা হয়ে উঠেছে।