আজ শুক্রবার, ১৩ Jun ২০২৫, ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন

Logo
‘আমিন ছুম্মা আমিন’ ধ্বনির মধ্যদিয়ে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ শেষ

‘আমিন ছুম্মা আমিন’ ধ্বনির মধ্যদিয়ে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ শেষ

‘আমিন ছুম্মা আমিন’ ধ্বনির মধ্যদিয়ে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ শেষ

পল্লী জনপদ ডেস্ক ॥

গাজীপুরের টঙ্গীতে তাবলিগ জামাত আয়োজিত ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে মুসলিম উম্মার ঐক্য, শান্তি ও কল্যাণ কামনায় ‘প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ’ শেষ হয়েছে। রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা ১ মিনিটে আখেরি মোনাজাত শুরু হয়। মোনাজাত পরিচালনা করছেন তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের শীর্ষ মুরব্বি, কাকরাইল জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা জুবায়ের আহমেদ।

রোববার ফজরের নামাজের পর থেকেই শুরু হয় হেদায়েতি বয়ান। হেদায়েতি বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক। এরপর কিছু সময় নসিহতমূলক কথা বলেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা।

বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লি এসেছেন ইজতেমা ময়দানে। সকাল থেকে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে ঢাকা ও এর আশাপাশের এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ ছুটে এসেছেন তুরাগ তীরের উদ্দেশ্যে।

মোনাজাতে মহান আল্লাহর দরবারে অশ্রুভেজা চোখে ক্ষমা প্রার্থনা ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করা হয়। এদিন যত দূর চোখ যায় ততদূর পর্যন্তই শুধু মুসল্লিদের ঢল দেখা গেছে। লাখো মুসল্লির কাতারে শরিক হয়ে পরম করুণাময়ের দরবারে হাত পেতেছেন খোদাপ্রেমী এসব মানুষ।

শনিবার রাত থেকে গোটা ইজতেমাস্থল দেশ-বিদেশের মুসল্লিদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। আল্লাহ প্রদত্ত বিধি-বিধান ও রাসুল (স.) প্রদর্শিত তরিকা অনুযায়ী জীবন গড়ার আহ্বান জানিয়ে দেশ-বিদেশের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লির জিকির আসকার, ইবাদত বন্দেগি আর পবিত্র কোরআনের আলোকে গুরুত্বপূর্ণ বয়ানের মধ্য দিয়ে সময় পার করেন তারা।

এদিকে, বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে এবার বিপুল সংখ্যক নারী অংশ নিয়েছেন। ইজতেমায় নারীদের অংশ নেওয়ার কোনো বিধান না থাকলেও আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন বয়সী কয়েক হাজার নারী মুসল্লি এসেছেন ইজতেমা স্থলে। তারা আগের দিন রাত থেকে ইজতেমা ময়দানের আশপাশ, বিভিন্ন মিলকারখানা, বাসা-বাড়িতে ও বিভিন্ন দালানের ছাদে বসে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন।

রোববার ভোর থেকে নারীরা ইজতেমা ময়দানের পাশে টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল মাঠ, ইজতেমা মাঠের পশ্চিম পাশে কামারপাড়া ও আশপাশের খোলা ময়দানে অবস্থান নেন। আখেরি মোনাজাতের ফজিলত লাভের আশায় তারা মোনাজাতে শরিক হতেই ময়দানের আশপাশের এলাকায় পর্দার সঙ্গে অবস্থান নেন।

টঙ্গী দত্তপাড়া এলাকার বাসিন্দা খালেদা আক্তার বলেন, বিশ্ব ইজতেমায় নারীদের অংশগ্রহণের বিধান না থাকলেও আমরা পর্দার সঙ্গে লাখ লাখ মুসল্লিদের সঙ্গে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে ইজতেমা ময়দানের পূর্ব পাশে ভবনের ছাদে বসে মোনাজাতে শরিক হতে এসেছি। আল্লার কাছে নিজের, পরিবারের ও দেশে কল্যাণ কামনা করছি।

সাইনবোর্ড এলাকা থেকে ইজতেমার মোনাজাতে আসা সালমা আক্তার জানান, স্বামী-সন্তান সবাই ইজতেমা ময়দানে গেছে। আমিও শনিবার রাতে টঙ্গীতে আমার এক আত্মীয়ের বাসায় এসে আখেরি মোনাজাতে শরিক হয়েছি।

ইজতেমার আয়োজকরা জানান, এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হবে দুই ধাপে। এর মধ্যে ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রথম ধাপের ইজতেমা। এ ধাপে অংশগ্রহণ করেছে ৪১ জেলা ও ঢাকার একাংশের মুসল্লিরা। এরপর আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় ধাপের ইজতেমা। এ ধাপে অংশ নেবেন ২২ জেলা ও ঢাকার বাকি অংশের মুসল্লিরা। ৮ দিন বিরতি দিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করবেন ভারতের মাওলানা সাদ অনুসারীরা। ১৬ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ২০২৫ সালের বিশ্ব ইজতেমা।

বাংলাদেশে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম আয়োজন হয়েছিল ১৯৪৬ সালে কাকরাইল মসজিদে। দিন দিন লোকসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামের হাজি ক্যাম্প, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পর ১৯৬৭ সাল থেকে টঙ্গীর তুরাগ তীরে নিয়মিত আয়োজন হয় বিশ্ব ইজতেমার। বিশ্ব ইজতেমার আখেরী মোনাজাতকে কেন্দ্র প্রতি বছর ইজতেমার শেষ দিনে তাবলিগের সাথী ছাড়াও সাধারণ মুসলমানরা ভীড় জমান তুরাগ তীরে। কানায় কানায় ভরে উঠে পুরো টঙ্গী এলাকা। অনেকে আগের রাত থেকেই ময়দানের আশপাশে অবস্থান নেন।

শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017
Developed By

Shipon